Rahul Majumder | | Editor: Syamasri Saha ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬ : ০৫Rahul Majumder

নিজস্ব সংবাদদাতা: মিষ্টি প্রেমের গল্পের ছবি থেকে গা ছমছমে ভূতুড়ে ছবি। তালিকায় বাদ নেই অ্যাডভেঞ্চারধর্মী ছবিও। ‘রহনা হ্যায় তেরি দিল মেঁ’, ‘বীর-জারা’, ‘তুঝে মেরি কসম’, ‘তুম্বাড়’, ‘চাঁদের পাহাড়’-এর মতো একের পর এক হিন্দি, বাংলা ছবি ফিরছে প্রেক্ষাগৃহে। সোজা কথায় সমালোচক থেকে দর্শক, সকলেরই মন জয় করা সেই সব ছবি এবার ফের একবার বড়পর্দায় আসতে চলেছে এই ছবি।

কেন একাধিক ছবি পরপর বড়পর্দায় এই সময় পুনরায় মুক্তি পাচ্ছে? আদৌ কি লাভের মুখ দেখছে প্রেক্ষাগৃহের মালিকেরা? শহরের দুই জনপ্রিয় প্রেক্ষাগৃহ ‘নবীনা’ ও ‘প্রিয়া’র কর্ণধারের সঙ্গে এই বিষয়ে জানতে চাইল আজকাল ডট ইন।

দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় প্রেক্ষাগৃহ ‘নবীনা’। ৫০ বছর পেরিয়েও মাল্টিপ্লেক্সের জমানায় আজও টানটান এই সিঙ্গল স্ক্রিনের চাহিদা। বলিউডের ছবির পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাংলা ছবিও দেদার 'চলে'। ‘নবীনা’র কর্ণধার নবীন চৌখানি এই প্রসঙ্গে খোলাখুলি বললেন, “এমন কিছু ছবি থাকে যার জৌলুস সময়ের প্রভাবে ফিকে হয়ে যায় না। বহু বছর পরেও বড়পর্দায় সেই ছবি বারবার দেখতে চায় মানুষ। ভাল গল্পের পাশাপাশি সেক্ষেত্রে নস্ট্যালজিয়ার প্রভাবের কথা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু তাই বলে কি তারকাদের সব সুপারহিট ছবি প্রেক্ষাগৃহে ফের মুক্তি পেলেই দর্শক ভিড় করে দেখতে আসবে? নিশ্চয়ই না। তাই কোন ছবি পুনরায় মুক্তি পেলে দর্শক দেখবে, সেকথা মাথায় রেখে ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে”। প্রশ্ন উঠল লাভ কি আদৌ হয় এক্ষেত্রে? জবাব এল, “কিছু তো নিশ্চয়ই হয়। নইলে, কেন হল মালিকেরা খামোখা সেই ছবি টানছেন? 'নবীনা'-এ তো এই সপ্তাহ থেকেই তুম্বাড় দেখা যাবে। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে ভূতুড়ে ছবির যে একটা পরিবেশ থাকে সেটা কিছুতেই ওটিটিতে পাওয়া সম্ভব নয়। ছবি দেখে ওই যে আঁতকে ওঠা, গা ছমছম করা...এসব প্রেক্ষাগৃহের বড়পর্দায় দেখে যেভাবে টের পান দর্শক তা মুঠোফোনে পান না। তাই বড়পর্দায় ভূতুড়ে ছবি দেখার আকর্ষণ তাঁদের থাকেই। তাই তুম্বাড় ফের দেখাবে নবীনা"। এত করেও প্রেক্ষাগৃহে কি ভরে উঠবে? হাসতে হাসতে নবীন চৌখানির উত্তর, “সে তো অনেক সময় শাহরুখ, সলমনের ছবি দেখার জন্যও প্রেক্ষাগৃহ 'হাউজফুল' হয় না। তাই এরকম ছবির ক্ষেত্রে সে আশা রাখি কী করে?”

‘প্রিয়া’র কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত অবশ্য খোলাখুলি জানালেন, এইমুহূর্তে হিন্দি এবং বাংলা ছবির বাজারে নতুন কোনও ছবি নেই বলেই একের পর এক জনপ্রিয় পুরনো সব ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। তাঁর কথায়, “প্রেক্ষাগৃহে তো ফাঁকা স্ক্রিন টাইম থাকতে পারে না। তাই জনপ্রিয় সব পুরনো ছবির মধ্যে ঝাড়াই-বাছাই করে কয়েকটি ফের বড়পর্দায় আসছে। প্রেক্ষাগৃহ ফাঁকা পড়ে থাকার থেকে সেটা অবশ্যই ভাল। দর্শকেরও একটু স্বাদবদল হয়”। 

জিজ্ঞেস করা হয়েছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ছবিগুলি মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে। সিঙ্গল স্ক্রিনে নয়। এটা কেন? অরিজিৎ বললেন, “মাল্টিপ্লেক্সের এক একটি প্রেক্ষাগৃহের আসন ১০০-১৫০। আর সেখানে সিঙ্গল স্ক্রিনের হলের আসনসংখ্যা ৮০০-১০০০। 'প্রিয়া'র আসনসংখ্যাই তো ৯০০। সিঙ্গল স্ক্রিনে এই দ্বিতীয়বার মুক্তি পাওয়া সব ছবি দেখতে কি দর্শকের ভিড় উপচে পড়বে? জবাবটা হল না। তাহলে বুঝতেই পারছেন লেভার বদলে ক্ষতির মুখে পড়বে সিঙ্গল-স্ক্রিন হলগুলো। এত দর্শকই হবে না। ছবি দেখানোর খরচটুকুও উঠে আসবে না। সেখানে মাল্টিপ্লেক্সের এক একটি প্রেক্ষাগৃহে ১০০ জন দর্শক ঢুকলেই তাঁদের একটা নির্দিষ্ট খরচ উঠে আসে। মাল্টিপ্লেক্সগুলির ক্ষেত্রে ‘সেল শেয়ার’-এর নিয়ম খাটে”। 

সামান্য থেমে আরও বলেন, “এইমুহূর্তে ‘স্ত্রী ২’ রমরমিয়ে চলছে। সবক’টি স্ক্রিন টাইমেই দর্শক আসছে। তাই এইমুহূর্তে আমার অন্তত কোনও পরিকল্পনা ‘প্রিয়া’তে এই দ্বিতীয়বার মুক্তি পাওয়া কোনও ছবি আসছে না”।